রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জীবতলি ইউনিয়নের ধনপাতা বন বিহারের ১৯ তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকাল হতে শুরু হওয়া ২৪ ঘন্টার ভিতরে চরকায় তুলা কেটে সুতা তৈরি করে কোমর তাঁতের মাধ্যমে তৈরি চীবরটি মঙ্গলবার বিকালে ধনপাতা বন বিহার অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাবোধি মহাস্থবিরের হাতে চীবর হস্তান্তর করেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুপায়ন দেওয়ান।
এ সময় রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ঝর্ণা খীসা, মৈত্রী চাকমা, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অঞ্জলিকা খীসা সহ অন্যান্য উপাসক উপাসিকারা উপস্থিত ছিলেন।
চীবর দানের দিনের দ্বিতীয় পর্বে মঙ্গলবার বিকালে কল্পতুরু ও কঠিন চীবর মাথায় নিয়ে নেচে গেয়ে চীবর দানে যোগ দেয় হাজারো পুণ্যার্থী। চীবর দানে পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, বুদ্ধমুর্তি দানসহ নানান দান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
এসময় চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বাড্ডা মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাস্থবিরসহ দুই পর্বে অর্ধ শতাধিক বুদ্ধ ভিক্ষু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দু'দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে শত শত বৌদ্ধ পূর্ণাথী অংশগ্রহণ নেন।
বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাসের শেষ দিনে প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের পর দিন থেকে দীর্ঘ এক মাস ধরে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে মাস ব্যাপী ধারাবাহিকভাবে চলে এই কঠিন চীবর দান উৎসব চলবে। ২৩ ও ২৪ নভেম্বর বন বিহার শাখা প্রধান রাঙামাটি রাজবন বিহারে অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ নভেম্বর এ দানোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি ৫ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। বিহার কমিটির কাছে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ঝর্ণা খীসা তা হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য আড়াই হাজার বছর আগে তথাগত ভগবান বুদ্ধের আমলে বিশাখা নামে একজন পূন্যবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে এই কাপড় বুদ্ধকে দান করেন। এই অনুকরণে ৪০ বছর আগে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে। পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বনভান্তে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন করেন। সে অনুযায়ী বন বিহার শাখাগুলোতে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়।
পিকে/এসপি